আজ ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার জি-২০ দেশ ̧গুলোর লাগামহীন কার্বন নিঃসরণ এবং মাত্রাতিরিক্ত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বের প্রাণ-প্রকৃতি যে
আজ হুমকির মুখে তাই এর ন্যায় বিচার এর দাবিতে প্রতীকি জলবায়ু বিপর্যয়রোধে “পৃথিবী বাঁচাতে পরী সমাবেশ” এর আয়েজন করা হয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের
সামনে। জলবায়ু বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি। ব্যক্তিগত গাড়ি ও বিমানের ব্যবহার, কয়লা এবং তেল নির্ভর বিদুৎসহ আরো
নানা কারণে আমাদের পৃথিবী প্রতিনিয়ত উত্তপ্ত হচ্ছে । তবে এই বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশের মতো প্রান্তিক দেশ গুলো । যার কারণে
বাংলাদেশের এক কোটি নব্বই লাখেরও বেশি শিশু সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব শিশুর এক-চতুর্থাংশের বয়স পাঁচ বছরের কম। আইপিসি তাদের
প্রতিবেদনে আরও আশঙ্কা জানিয়েছে যে, এই শতাব্দীর মধ্যে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে যেতে পারে। দেশের ১৯টি জেলার প্রায় ৬০ হাজার
বর্গকিলোমিটার এলাকা ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে গৃহহীন হবে প্রায় দুই কোটি মানুষ। এসবের ফলে দেশে খাদ্য উৎপাদন, সুপেয় পানির সংকট
দেখা দিবে, বাড়ছে নিত্য নতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অসুখ-বিসুখ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘরহারা মানুষের সংখ্যা । ফলাফল হিসেবে শহরাঞ্চলে বস্তিবাসীর
সংখ্যা ও বাড়ছে।ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক অফিসার শান্তনু বিশ্বাসের সঞ্চালনায় “স্টপ ইমিশন নাও বাংলাদেশ” এর সদস্য সচিব মনজুর হাসান দিলুর
সভাপতিত্তের¡ বক্তব্য রাখেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এর পরিসি অফিসার আন ম মাছুম বিল্লাহ ভূঞা, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের প্রজেক্ট ম্যানেজার বরনী দালবত, বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাইমেট নেটওয়ার্ক এর কমিউনিকেশন
অফিসার মাহামুদুল হাসান, সমাজসেবক নুরু মন্ডল, ঢাকা আইডিয়াল ̄স্কুলের ও ধানমন্ডি কচিকন্ঠ স্কুলের শিক্ষার্থীসহ প্রমুখ।
ঢাকা আইডয়িাল স্কুলের শিক্ষার্থী সানজিদা আক্তার বলেন, আমাদের এখানে কোন প্লানেট বি নেই। পৃথিবী একটাই। কাজেই এই পৃথিবীকে বাচাতে
আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করতে হবে। আমাদের ভবিষ ̈তের কথা ভেবে হলেও এই কার্বন ডাই অক্সাইড বাড়ানো যাবে না।
আমরা একটি সুন্দর পৃথিবী চাই।
ধানমন্ডি কচিকন্ঠ স্কুলের শিক্ষার্থী লিচি বলেন, বাসযোগ ̈ নগরী তৈরি করতে হলে আমাদের প্রথমেই কার্বন ইমিশন বন্ধ করতে হবে। আমরা চাই সবাই সুখী ও
সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকবে। ছাত্র ছাত্রীরা হেঁটে ও বাইসাইকেল চালিয়ে ̄‹ুলে যাতায়াত করবে। ব ̈৩িগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে রিকশা ও বাইসাইকেল চালিয়ে ̄‹ুলে
ও কাজে যেতে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে। তবেই আমরা প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে পারবো।
প্রতীকি ডেবিল চরিত্র বলেন, তারা পৃথিবীর ধ্বংস চায়, তারা চায় রাস্তায় যানজট বাড়ুক, সড়ক দূর্ঘটনা বেশি হোক, কার্বন নিঃসরন বাড়ুক, জলবায়ু বিপর্যয় হয়ে
বন্যা,খরা, জলোচ্ছাস হোক। তারা চায় তাদের থাকার জায়গার মত পৃথিবী উত্তপ্ত হয়ে উঠুক, কেউ যেন বাঁচতে না পারে। গাছপালা সব মরে যাবে। এভাবেই
তারা মুনাফার পাহাড় গড়তে চায়। কেউ শান্তিতে থাকুক তারা চায় না।
প্রতীকি পরী চরিত্র বলেন, তারা পৃথিবীকে শান্ত দেখতে চায়। প্রকৃতি যেন তার আপন মহিমায় সেজে উঠে। যানজট মুক্ত ব্যক্তিগত গাড়ি মুক্ত শহর চায়,
প্রাণভরে বিশুদ্ধ বাতাস নিঃশ্বাস নিতে পারে, বিশুদ্ধ খাবার পানি পায়। জীবাশ্ম জ্বালানী ব ̈বহার বন্ধ করে এবং নবায়ন যোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করবে।
চারিদিকে সবুজ বনায়ন থাকবে, মানুষ সুখে শান্তিতে থাকবে এটাই পরীর চাওয়া।
কার্বন নিঃসরণ কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বারবার ব ̈র্থতার পরিচয় দিচ্ছে । পৃথিবীব ব্যপী প্রাণ-প্রকৃতির অস্তিত্ত্ব যখন বিনাশের পথে
এখনও তারা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগছেন। যার কারণে বাংলাদেশের মত সমুদধ উপকূলের দেশ সমূহের জন্য এ বিপর্যয় ভয়াবহ রূপ
নিয়েছে। জলবায়ু বিপর্যয়ের প্রভাব মোকাবেলায় এবং বিপর্যয় রোধে করনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কপ২৬ অনুষ্ঠিত হলেও জীবাশ্ম জ্বালানির এই ব্যবহার
বন্ধ করতে প্রয়োজন নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ। যেমন হাঁটা, সাইকেল ও অযান্ত্রিক যানবাহন এবং গনপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা । যার কারণে শুধুমাত্র আলোচনা ছাড়া জীবাশ্ম জালানীর ব্যবহার বন্ধে আর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ বা কোনো প্রকার
সফলতা দেখা যাচ্ছে না। জলবায়ু বিপর্যয় রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায়, উদাসীনতা ও ব্যর্থতার প্রতিবাদে তরুণ প্রজন্ম কর্তৃক জলবায়ু সন্তান ন্যায়বিচার
এর দাবিতে প্রতীকি “পৃথিবী বাঁচাতে পরী সমাবেশ” এর আয়োজন করে।